১০৪ যাত্রী নিয়ে অদৃশ্য হয়ে যাওয়া ট্রেনের গুজব

Published on: February 21, 2024

১১০ বছরেও খোঁজ মেলেনি ১০৪ যাত্রী নিয়ে অদৃশ্য হয়ে যাওয়া সেই ট্রেনের—শিরোনামে একটি খবর বিভিন  সময়ে দেখা গিয়েছে। এই খবরে বলা হয়েছে, ১৯১১ সালে ইটালির রোম শহর থেকে ১০৪ জন যাত্রী নিয়ে একটি বিলাসবহুল ট্রেন যাত্রা শুরু করেছিল। পরে সেটা একদম অদৃশ্য হয়ে যায়। সেই ট্রেন এবং এর যাত্রীদের পরে আর কখনো খুঁজে পাওয়া যায়নি—এমনটাই দাবি করা হচ্ছে।

তবে ফ্যাক্টওয়াচের অনুসন্ধানে এমন কোনো ট্রেন উধাও হওয়ার ঘটনা খুঁজে পাওয়া যায় নি। এছাড়া আন্তর্জাতিক ফ্যাক্টচেকিং সংস্থা স্নোপস এই ঘটনাকে ‘গুজব’ হিসেবে সনাক্ত করেছে।

গুজবের উৎস

মূলত কয়েকটি সংবাদমাধ্যমের ওয়েবসাইট এবং ফেসবুক পেজ থেকে এই খবরটি শেয়ার করার মাধ্যমে ফেসবুকে এই গুজবটি ছড়িয়েছে । এমন কিছু খবর দেখুন এখানে , এখানে , এখানে , এখানে ,   এখানে  , এখানে  , এখানে  , এখানে  , এখানে  , এখানে  , এখানে  , এখানে  , এখানে , এখানে , এখানে , এখানে , এখানে , এখানে , এখানে ।


জাগো নিউজে প্রকাশিত  খবরে বলা হয় , ১৯১১ সাল। ঠিক ১১০ বছর আগে ধুমধাম করে একটি ট্রেনের সূচনা করেছিলো ইতালির জেনেটি নামে একটি রেল সংস্থা। ——– রোমের একটি স্টেশন থেকে রওনা দিয়েছিলো ট্রেনটি। যাত্রীদের জন্য ট্রেনে এলাহি খাবারের ব্যবস্থাও ছিলো। উদ্দেশ্য ছিলো ট্রেনে করে যাত্রীদের ইতালির বিভিন্ন অঞ্চল ঘুরিয়ে দেখানো। —— যাত্রাপথে একটি সুড়ঙ্গ পড়েছিলো। ট্রেন সেই সুড়ঙ্গে প্রবেশ করে স্বাভাবিকভাবেই, কিন্তু সুড়ঙ্গের অন্যমুখ দিয়ে আর কোনোদিন বের হয়ে হয়নি। পরবর্তীকালে ট্রেনের সন্ধানে সুড়ঙ্গের মধ্যে অনেকেই গেছেন। কিন্তু তন্ন তন্ন করে খুঁজেও তার চিহ্ন পাওয়া যায়নি। পাহাড়ের বুক চিরে তৈরি হওয়া ওই সুড়ঙ্গের ভিতর আর কোনও রাস্তাও ছিলো না। ট্রেন দুর্ঘটনারও কোনও চিহ্ন মেলেনি। ট্রেনের মধ্যে মোট ১০৬ জন ছিলেন। পরবর্তীকালে তাঁদের মধ্যে দুজনের সন্ধান পাওয়া গিয়েছিলো। সুড়ঙ্গের বাইরে থেকে তাঁদের উদ্ধার করা হয়েছিলো। সেই সময় প্রকাশিত খবর অনুযায়ী, অগোছালো কথা বলছিলেন তাঁরা। ওই ঘটনা সম্বন্ধে বিশদে সেভাবে কিছুই জানাতে পারেননি তাঁরা। দুজনের কথার বিষয়বস্তু ছিলো একই। সুড়ঙ্গে প্রবেশের মুহূর্তে সাদা ধোঁয়া গ্রাস করেছিলো ট্রেনটিকে। সেই সময় নাকি কোনওক্রমে এই দুজন ট্রেন থেকে ঝাঁপ দেন। তারপর আর কিছু মনে ছিলো না তাঁদের। মেক্সিকোর এক চিকিৎসক দাবি করেন, অনেক বছর আগে মেক্সিকোর একটি হাসপাতালে নাকি ওই ১০৪ জন যাত্রীকে ভর্তি করা হয়েছিলো। তাঁরা প্রত্যেকেই অসংলগ্ন কথা বলছিলেন। প্রত্যেকেই কোনও একটি ট্রেনের উল্লেখ করেছিলেন। সেই ট্রেনে করেই নাকি তাঁরা মেক্সিকো পৌঁছেছিলেন। —  সেই সময় সংবাদমাধ্যমে প্রকাশিত খবর অনুযায়ী ট্রেনটি নাকি টাইম ট্রাভেল করে ১৮৪০ সালের মেক্সিকোয় পৌঁছে গিয়েছিলো। তবে এসব ব্যাখ্যার কোনো প্রমাণ পায়নি বিজ্ঞানীরা।

একই ধরনের খবর প্রকাশ করেছে আরটিভিবাংলাদেশ প্রতিদিন , দৈনিক যুগান্তরদৈনিক ইনকিলাব , সময় নিউজ , একুশে টিভিবাংলা ভিশননিউজ ২৪ ,ইন্ডিপেন্ডেন্ট টিভি  ইত্যাদি


ফ্যাক্টওয়াচের অনুসন্ধান

লক্ষণীয়, এসব খবরে ট্রেনের নাম, কোচ নাম্বার, স্টেশনের নাম, যাত্রার তারিখ, ভূ-গর্ভস্থ টানেল এর নাম, অবস্থান ইত্যাদি কিছুই জানানো হচ্ছে না।

প্রারম্ভিক স্টেশন হিসেবে রোম শহরের কথা বলা হলেও নির্দিষ্ট স্টেশনের নাম পাওয়া যাচ্ছে না। ১৯১১ সালের কথা বলা হলেও মাস এবং দিনের কথা নাই।

ট্রেন কোম্পানি হিসেবে জানেটি’র নাম জানা গেলেও কোচ নাম্বার এবং ট্রেনটার অন্যান্য বিস্তারিত বর্ণনা পাওয়া যাচ্ছে না।

১০৪ জন যাত্রীর কথা জানানো হলেও কারো নাম কিংবা পরিচয় জানানো হয়নি।

ফলে , এই রহস্যময় ঘটনা সম্পর্কে যাচাই করার কোনো উপায়ই নেই।

ইটালির উল্লেখযোগ্য রেল দুর্ঘটনার তালিকায় ১৯১১ সালের এই ট্রেন ‘উধাও’ হওয়ার কোনো উল্লেখ খুঁজে পাওয়া গেল না।

এছাড়া, ১৯১১ সালে বিশ্বব্যাপী ট্রেন দুর্ঘটনার তালিকাতেও এই ট্রেন এর কথা পাওয়া গেল না।

Zanetti’ ট্রেন কোম্পানির খোজে

 

আনন্দবাজার জানাচ্ছে, ওই ট্রেনের সূচনা করেছিল ইটালির জেনেটি নামে একটি রেল সংস্থা ।

ইংরেজিভাষী ডেইলিহান্ট ও জানাচ্ছে, ১৯১১ সালের জুন মাসে  Zanetti নামের রেল কোম্পানি এই বিশেষ ট্রেনের ব্যবস্থা করেছিল।

তবে ফ্যাক্টওয়াচের অনুসন্ধানে Zanetti নামে কোনো সরকারি কিংবা বেসরকারি রেলওয়ে কোম্পানি খুজে পাওয়া গেল না।

আমেরিকায় Zanetti নামে একটি কাপড় চোপড়ের ব্র্যান্ড খুজে পাওয়া গেল।

ইটালিতে Massimo Zanetti নামে একটি কোমল পানীয়ের কোম্পানি রয়েছে।

ইংল্যান্ডে Zanetti নামে একটি বেসরকারি কোম্পানি খুঁজে পাওয়া গেল, যারা মার্বেল পাথর এর ব্যবসা করে।

তবে রেলওয়ের সাথে সম্পর্কিত কোনো Zanetti কোম্পানিকে খুজে পাওয়া গেল না ।

বর্তমানে ইটালির রেলওয়ে অবকাঠামো এবং সেবা পরিচালনা করছে Ferrovie dello Stato নামক সরকারি কোম্পানিটি। এর অধীনে বিভিন্ন সেবা এবং অবকাঠামোর জন্য স্বতন্ত্র কর্পোরেশন কিংবা কোম্পানি রয়েছে। ITALO এর মত কয়েকটি বেসরকারি রেল কোম্পানিও রেল সেবা প্রদান করছে।

তবে এসব সরকারি বা বেসরকারি কোম্পানির মধ্যে Zanetti নামে কোনো কোম্পানি খুজে পাওয়া গেল না।

এছাড়া, যেসব রেল কোম্পানি অতীতে বিলুপ্ত হয়ে গিয়েছে, তাদের তালিকাতেও Zanetti নামে কিছু পাওয়া গেল না।

ইটালিতে রেলের ইতিহাস

১৮৩৯ সালে ইটালিয়ান ভূ-খন্ডে প্রথম ট্রেনের উদ্বোধন হয়। ১৮৬১ সালে ইটালি প্রজাতন্ত্র গঠিত হলে রেলসেবা সম্প্রসারিত হতে থাকে।

Gaugemaster নামের একটি ইংল্যান্ডের রেলওয়ে ভিত্তিক ওয়েবসাইট থেকে জানা যাচ্ছে, ১৯০৫ সালে  Ferrovie dello Stato নামক সরকারি সংস্থা গঠিত হয়। এর আগে কয়েকটা বেসরকারি কোম্পানি ইটালির বিভিন্ন স্থানে রেল পরিসেবা চালালেও , ১৯০৫ সালে এসব বেসরকারি কোম্পানিগুলোকে রাষ্ট্রায়ত্ত করা হয় এবং Ferrovie dello Stato এর অধীনে ন্যস্ত হয়।

ফলে, ১৯১১ সালে Zanetti কিংবা অন্য কোনো বেসরকারি কোম্পানির পক্ষে নতুন রেলসেবা চালু করা একটু অস্বাভাবিক শোনাচ্ছে।

মেক্সিকোতে রেলের ইতিহাস

১৮৭৩ সালে মেক্সিকোতে প্রথম রেল পরিসেবা চালু হয় হয়। প্রেসিডেন্ট  Sebastián Lerdo de Tejada তখন ভেরাক্রুজ থেকে মেক্সিকো সিটির এই রেল পরিসেবা উদ্বোধন করেন।

কাজেই , ১৮৪০ সালে টাইম ট্রাভেল করে কিংবা অন্য কোনোভাবে কোনো ট্রেন দেখতে পাওয়ার রেকর্ড নেই।

যে ডাক্তার এই টাইম ট্রাভেল করা ট্রেন যাত্রীদের গপ্পো শুনিয়েছেন, সেই ডাক্তারের নাম উল্লেখ না করায় বিস্তারিত যাচাই করা সম্ভব হচ্ছে না।

টাইম ট্রাভেল করা কি সম্ভব?

সিনেমা বা সায়েন্স ফিকশনে যেমন দেখানো হয়, অতীতের ট্রাভেলার ভবিষ্যতে চলে যাচ্ছে, বা ভবিষ্যতের ট্রাভেলার অতীতে ফিরে আসছে, সেভাবে টাইম ট্রাভেল সম্ভব নয়।

নাসার ওয়েবসাইটে টাইম ট্রাভেল নিয়ে বলেছে, দ্রুতগতির বিমানে বা রকেটে সময়কে ভিন্নভাবে কাটাতে দেখা যায়। এক সেকেন্ডে এক সেকেন্ড পার না হয়ে কম বেশি পার হতে পারে। তবে সিনেমায় যেভাবে দেখানো হয়,সেভাবে টাইম ট্রাভেল সম্ভব নয়।

উচ্চ মাধ্যমিক এর ছাত্র ছাত্রীরা পদার্থবিজ্ঞান এ ‘Time Dilation’ বিষয়ক বেশ কিছু গাণিতিক সমস্যা সমাধান করে থাকেন। কোনো এ্যাস্ট্রনট মহাশূন্যে ভ্রমণ করলে তার সময় পৃথিবীর সাপেক্ষে কিভাবে পরিবর্তিত হয়, সেই বিষয়ে প্রচুর গাণিতিক সমস্যা সমাধান করা হয় সেখানে।

তবে এগুলাকে কোনোটাকেই টাইম ট্রাভেল বলা যায় না। পৃথিবী এবং রকেটের সময়ের পরিবর্তন হিসাব করা যায় এ সকল অঙ্ক থেকে ।

কিছু কিছু সায়েন্স ফিকশন লেখক দাবি করেন, রকেটের বেগ আলোর বেগের চেয়ে বেশি হলে ট্রাভেলার ভুবিষ্যতে চলে যেতে পারবেন।

তবে অতীতে কিভাবে যাওয়া যায়, সে উপায় কেউ বাতলে দিতে পারেন নি।

তবে বিশ্বের বিভিন্ন সময়ে অনেকে টাইম ট্রাভেলার বলে দাবি করেছেন নিজেকে। এবং এদের অধিকাংশই মিথ্যাবাদী হিসেবে প্রমাণিত হয়েছেন। উইকিপিডিয়াতে এরকম ভূয়া টাইম ট্রাভেলারদের এমন একটা লিস্টও আছে। বিভিন্ন সময়ে এদের দাবি মিথ্যা প্রমাণিত হয়েছে।

এমনকি, ফ্যাক্টওয়াচ এর পক্ষ থেকেও অতীতে টাইম ট্রাভেল এর দাবি যাচাই করা হয়েছে। যেমন দেখুন – ৩৭ বছর আগের বিমান কি টাইম ট্রাভেল করে ফিরে এসেছে ?
এবং টাইম ট্রাভেলার এর দাবি অনুযায়ী ২০২৬ সালে কি পৃথিবী পুরো অন্ধকারে ডুবে যাবে?

ফলে ,১৯১১ সালে কোনো ব্যক্তি টাইম ট্রাভেল করে ১৮৪০ সালে চলে গিয়েছেন- এমন দাবি কোনোভাবেই গ্রহণযোগ্য নয়। বৈজ্ঞানিকভাবে এটি পুরোপুরি অসম্ভব।

হারিয়ে যাওয়া ১০৪ প্যাসেঞ্জারের খোজে

১৯১২ সালে ২২০০ এরও বেশি আরোহী এবং ক্রু নিয়ে  টাইটানিক জাহাজ উত্তর সাগরে ডুবে যায়। মারা যায় ১৫০৩ জন মানুষ। সেই সময়ের জন্য সেরা প্রযুক্তি ছিল এই টাইটানিক জাহাজ এবং এটাই ছিল টাইটানিকের প্রথম যাত্রা। তাই এই যাত্রা ছিল সেই সময়ের পত্রিকায় খুব আলোচিত ঘটনা। দুর্ঘটনার পরে এটা নিয়ে আলোচনার পরিমাণ আরো বাড়ে।

টাইটানিক এর জীবিত এবং মৃত সকল যাত্রী এবং নাবিকদের নিয়ে অনেক গবেষণা হয়েছে। উক্ত যাত্রীদের  তালিকা যে কেউই অনলাইনে দেখতে পাবে।

১৯১১ সালে কথিত Zanetti ট্রেন যদি বিশেষ আয়োজন করে থাকে, সেক্ষেত্রে ইটালির ধনী এবং প্রভাবশালী পরিবারের সদস্যরাই এই বিশেষ ভ্রমণের অংশ হওয়ার কথা। ১০৪ জন যাত্রী এবং ৬ জন নিখোঁজ হয়ে গেলে, তাদের নিয়ে হৈ চৈ পড়ে যাওয়ার কথা। নিদেনপক্ষে যারা যারা নিখোঁজ হয়েছেন, তাদের নামের তালিকা পাওয়া উচিত।

কিন্তু বিস্ময়ের ব্যাপার, উক্ত ট্রেন যাত্রার অংশ হয়েছেন এমন কোনো যাত্রী কিংবা ক্রু-র নাম অনলাইনে কোথাও পাওয়া যাচ্ছে না। আনন্দবাজার, ডেইলিহান্ট কিংবা অন্যান্য সংবাদমাধ্যম একজন নিখোঁজ যাত্রীরও নাম উল্লেখ করতে ব্যর্থ হয়েছে।

Zanetti ট্রেন নিয়ে আন্তর্জাতিক অনুসন্ধান

বিভিন্ন সময়ে এই ট্রেন উধাও হওয়া নিয়ে অনেক গুজব ইউটিউবের বিভিন্ন চ্যানেলে এবং ইংরেজিভাষী কয়েকটি ওয়েবসাইটে দেখা গিয়েছে। যেমন –  এখানেএখানে , এখানে , এখানে ,এখানে , এখানে , এখানে ।

এসব গুজব নাকচ করে দিয়েছে এমন বেশ কয়েকটা নিবন্ধও পাওয়া যাচ্ছে। যেমন-  এখানে , এখানে , এখানে , এখানে ।

Roy Bainton এর এই রেফারেন্সবিহীন  ব্লগে ঘটনার তারিখকে ১৪ই জুলাই ১৯১১ এবং ঘটনাস্থল কে রোমের লম্বারডি বলে উল্লেখ করা হয়েছে। নিবন্ধে তিনি এই ঘটনাকে ফেক নিউজ হিসেবে অভিহিত করেছেন।

কুরা (Quora) তে এ সংক্রান্ত এক প্রশ্নের জবাবে নিয়মিত উত্তরদাতা এ্যান্ডি ব্রাডফোর্ড বলেছেন, ১৯১১ সালে এমন কোনো ঘটনা ঘটে থাকলে সেটা হত পম্পেই এর অগ্নুতপাত এর পরে ইটালির জন্য দ্বিতীয় বৃহত্তম ট্রাজেডি। এটা নিয়ে পত্র পত্রিকায় যেহেতু কোনো লেখালেখি নেই, তাই নিঃসন্দেহে এটা গুজব।

ওড়িশা টিভির এই প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ব্যাপকভাবে বিশ্বাস করা হয় যে ট্রেন উধাও এর এই ঘটনাটা একটা কাল্পনিক গল্প এবং এর কোনো সত্যতা নেই।

আন্তর্জাতিক ফ্যাক্টচেকিং সংস্থা স্নোপস এর এই নিবন্ধে বলা হয়েছে, ২০১৭ সালের আগে এই ভূতুড়ে ট্রেন এর গল্পটা কোনো পত্রপত্রিকায় পাওয়া যায়নি। এত ভয়াবহ একটা দুর্ঘটনা ঘটলে অবশ্যই অতীতে তাঁর উল্লেখ পাওয়া যেত। এছাড়া, ইউক্রেনিয়ান কথাসাহিত্যিক নিকোলাই চেরকাশিন (Nikolai Cherkashin)কে তারা এই ভূতুড়ে ট্রেনের গল্পের রূপকার হিসেবে সনাক্ত করেছে।

ফ্যাক্টওয়াচের সিদ্ধান্ত

সার্বিক বিবেচনায় বলা যায়, ১৯১১ সালে ইটালিতে কোনো একটি ট্রেনের উধাও হয়ে যাওয়ার খবরটি সম্পর্ণ গুজব। দীর্ঘদিন ধরে আন্তর্জাতিক পরিমণ্ডলে এই গুজবটা প্রচলিত রয়েছে, এবং আন্তর্জাতিক ফ্যাক্টচেকিং সংস্থাও একে গুজব হিসেবে চিহ্নিত করেছে। । সাধারণ ফেসবুক ব্যবহারকারী এবং অনলাইন পোর্টাল বাদেও মূলধারার কয়েকটি সংবাদমাধ্যমেও যাচাই বাছাই ছাড়াই এই  সংবাদটি প্রকাশিত হয়েছে ,যার ফলে পাঠকরা বিভ্রান্ত হচ্ছেন।

ফ্যাক্টওয়াচ এই সকল সংবাদকে ‘মিথ্যা’ হিসেবে সাব্যস্ত করছে।

ইটালির নিখোজ এই ট্রেনের গুজবের ব্যাপারে ২০২১ সালের ২০শে সেপ্টেম্বর ফ্যাক্টওয়াচ ‘অপ্রমাণিত’ রেটিং যুক্ত একটি ফ্যাক্টচেকিং প্রতিবেদন প্রকাশ করেছিল । সাম্প্রতিক সময়ে এই গুজবের ব্যাপারে আরো কিছু তথ্যের প্রেক্ষিতে নতুনভাবে ‘মিথ্যা’ রেটিং যুক্ত বর্তমান প্রতিবেদন প্রকাশ করা হল। পুরনো প্রতিবেদন দেখতে পাবেন এখানে –ইটালিতে ১৯১১ সালে ১০৪ যাত্রীসহ ট্রেন হারিয়ে যাওয়ার খবরটি অপ্রমানিত

এই নিবন্ধটি ফেসবুকের ফ্যাক্ট-চেকিং প্রোগ্রামের নীতি মেনে লেখা হয়েছে।।
এর উপর ভিত্তি করে ফেসবুক যে ধরণের বিধিনিষেধ আরোপ করতে পারে, সে সম্পর্কে বিস্তারিত জানুন এখানে
এছাড়া এই নিবন্ধ সম্পর্কে আপনার মূল্যায়ন, সম্পাদনা কিংবা আরোপিত বিধিনিষেধ তুলে নেয়ার জন্য আবেদন করতে এই লিঙ্কের সাহায্য নিন।

কোনো তথ্যের সত্যতা যাচাই করতে আমাদেরকেঃ
ইমেইল করুনঃ contact@factwatch.org
অথবা ফেইসবুকে মেসেজ দিনঃ facebook.com/fwatch.bangladesh