রোনালদো বিষয়ে একাধিক গুজব এবং বিভ্রান্তিকর দাবি

Published on: December 29, 2022

সম্প্রতি পর্তুগালের তারকা ফুটবলার ক্রিশ্চিয়ানো রোনালদোকে নিয়ে একটি স্তুতিমূলক পোস্ট ভাইরাল হয়েছে যেখানে তার বিভিন্ন সেবামূলক কাজের তথ্য রয়েছে।  কিন্তু ফ্যাক্টওয়াচের অনুসন্ধানে দেখা যাচ্ছে, এই ভাইরাল পোস্টে অধিকাংশ তথ্যই ভূয়া।  

গুজবের উৎস 

ফেসবুকে ভাইরাল হওয়া পোস্টগুলো দেখুন এখানে,এখানে,এখানে,এখানে,এখানে,এখানে,এখানে,এখানে

 

দাবি ১: রোনালদো কি ফিলিস্তিনকে মিলিয়ন ডলার সহায়তা করেছে?

 

রোনালদো ফিলিস্তিনকে ৩ বছরে ৩ মিলিয়ন ডলার সহায়তা করেছে এমন পোস্ট ২০১৯ সালে ফেসবুকে ছড়িয়ে পড়েছিলো। অনেক জায়গায় এটাকে দেড় মিলিয়ন ডলারের অনুদান হিসেবেও প্রচার করা হচ্ছিলো।

সেইসময় ফ্যাক্টওয়াচ উক্ত গুজবের সত্যতা অনুসন্ধানে করে ফ্যাক্টচেক রিপোর্ট প্রকাশ করেছিলো। ৩১ মে, ২০২১ সালে প্রকাশিত উক্ত প্রতিবেদন থেকে জানা যায় “ক্রিশ্চিয়ানো রোনালদো গাজায় ফিলিস্তিনিদের জন্য ১.৫ মিলিয়ন ডলার অনুদান দেয়ার প্রচারণাটি মিথ্যা এবং ভিত্তিহীন। সামাজিক মাধ্যমে এ ধরনের দাবি করা পোস্টগুলোতে নির্ভরযোগ্য কোন সূত্রের উল্লেখ ছিল না। ফিলিস্তিনিদের নিয়ে রোনালদো অনেক বারই গুজবের শিকার হয়েছেন এবং এ বিষয়ে রোনালদোর প্রফেশনাল ম্যানেজমেন্ট এজেন্সী ‘Gestifute’ এএফপিকে জানায়, “রোনালদোকে ঘিরে বাকি সব গুজবের মত এটিও মিথ্যা।” এএফপি আরও জানায়, ৭ মে ২০১৯ তারিখে প্রথমে তারা এই ভুল তথ্যটি খুঁজে পায় একটি আরবি ভাষার ফেসবুক পোস্ট থেকে যা ৭,০০০ বার শেয়ার হয়েছিল। পরবর্তীতে স্প্যানিশ এবং ফরাসী ভাষায় পোস্টটি সামাজিক মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়ে।”

অতএব এটা বলা যায় ক্রিশ্চিয়ানো রোনালদো ফিলিস্তিনকে ৩ মিলিয়ন ডলার সহায়তা করেন নি।

 

দাবি ২: রোনালদো ইসরায়েলী প্লেয়ারদের সাথে প্রীতি ম্যাচের পর জার্সি বদলাননি

ভাইরাল ভিডিওতে দাবি করা হয়, রোনালদো একটি প্রীতি ম্যাচে ইসরায়েলের প্লেয়ারদের সাথে জার্সি বদল করেননি।

গুগল থেকে জানা যাচ্ছে পর্তুগাল সর্বশেষ ইসরায়েলের সাথে আন্তর্জাতিক প্রীতি ম্যাচ খেলে ১০ জুন ২০২১ সালে। এই ম্যাচে ক্রিশ্চিয়ানো রোনালদো খেলেছিলেন, এবং প্রথমার্ধের ৪৪ তম মিনিটে একটি গোলও করেছিলেন।

এই ম্যাচের ৭২তম মিনিটে রোনালদো মাঠ থেকে উঠে যান, এবং বদলী খেলোয়াড় হিসেবে Gonçalo Guedes খেলতে নামেন ।

অর্থাৎ, এই ম্যাচের শেষ মুহুর্তে  রোনালদো মাঠেই ছিলেন না । কাজেই বিপক্ষ দল ইসরায়েলের কোনো খেলোয়াড়ের সাথে তার জার্সি বদল এর সুযোগ ছিল না।

২৫ জুন ২০২২ সালে ফ্রান্সের গণমাধ্যম FRANCE 24 English এই দাবীর সত্যতা অনুসন্ধান করে ইউটিউবে একটি প্রতিবেদন প্রচার করে। উক্ত অনুসন্ধানে জানা যায় যে ম্যাচটি পর্তুগাল আর ইসরায়েলের বলে দাবি করা হচ্ছে সেই ম্যাচটি হয়েছিলো পর্তুগাল এবং আইসল্যান্ডের মধ্যে। উক্ত ম্যাচে রোনালদো আইসল্যান্ডের ক্যাপ্টেন অ্যারন গুনারসনের সাথে খারাপ ব্যবহার করেন এবং জার্সি অদলবদল থেকে বিরত থাকেন। তবে  অ্যারন গুনারসন দাবি করেন তারা পরে জার্সি অদলবদল করেছিলেন।

লাস্টলি ডট কম এর এই ফ্যাক্টচেক প্রতিবেদন থেকে জানা যাচ্ছে , ২০১৯ সালের পুরনো একটি ভিডিওতে রোনালদোকে কোনো এক ম্যাচের পুরষ্কার বিতরণী অনুষ্ঠানে এক কর্মকর্তার সাথে করমর্দন না-করতে দেখা যায়। বিভিন্ন ভাইরাল পোস্টে এই কর্মকর্তাকে ‘ইসরাইলি কর্মকর্তা’ বলে দাবি করছে ফেসবুক ব্যবহারকারীরা। তবে অনুসন্ধানে দেখা যাচ্ছে, এই ম্যাচটা ছিল ২০১৯ সালের ইটালিয়ান কাপের ফাইনাল, যেখানে রোনালদোর দল জুভেন্ডাস প্রতিপক্ষ লাজিওর কাছে হেরে যায়।

ম্যাচের শেষে পুরষ্কার বিতরণীর এক পর্যায়ে রোনালদো (এবং জুভেন্টাস দলের সবাইকে) রানার্স আপের মেডেল পরিয়ে দেয়া হয়। মেডেল পরার পরমুহুর্তেই রোনালদো সেই মেডেল খুলে হাতে নিয়ে স্টেজের সামনে থেকে চলে যান। এই সময়েই রোনালদো সামনে অপেক্ষমান এক কর্মকর্তার বাড়ানো হাত উপেক্ষা করেন, অথবা হাতটি দেখতে পাননি। ফ্যাক্টলি’র অনুসন্ধানে দেখা যাচ্ছে, এই কর্মকর্তা হলেন সৌদি আরবে ইটালির এ্যাম্বাসাডর লুকা ফেরারি ।

তার সাথে ইজরাইল এর কোনো সম্পর্ক নেই। কিন্তু টুইটার ব্যবহারকারীরা লুকা ফেরারির বুকে ইজরাইলের পতাকা বসিয়ে দিয়ে এই বিভ্রান্তির সৃষ্টি করছে।

আজতক এর এই ফ্যাক্টচেক প্রতিবেদনে দেখা যাচ্ছে, ২০১৯ সালে রোনালদো তার জুভেন্তাসের জার্সি তৎকালীন ইজরায়েলের বিদেশমন্ত্রী ইজরায়েল কাৎজকে উপহার দিয়েছিলেন।

অর্থাৎ, রোনালদোর সাথে ইজরাইল এর সম্পর্কের কোনো সমস্যা নেই।

 


দাবি ৩:
রোনালদো কি তার গোল্ডেন বুটজোড়া দান করেছেন?

 

ভাইরাল ভিডিওতে দাবি করা হয় ক্রিশ্চিয়ানো রোনালদোর ২০১০-১১ মৌসুমে জেতা ইউরোপিয়ান গোল্ডেন বুটটি ফিলিস্তিনি মুসলমান অনাথ শিশুদের চিকিৎসা ও শিক্ষা বাবদ দান করেন যার মূল্য ১৫০ কোটি টাকা।

উইকিপিডিয়া থেকে জানা যাচ্ছে ক্রিশ্চিয়ানো রোনালদো ২০০৭-০৮, ২০১০-১১, ২০১৩-১৪(লুইস সুয়ারেজের সাথে যৌথভাবে), এবং ২০১৪-১৫ মৌসুমে ইউরোপিয়ান গোল্ডেন বুট জেতেন।

উইকিপিডিয়ার লিস্টটি দেখুন এখানে-

 

২০শে নভেম্বর,২০১২ সালে Football Target আরবিয়ান নিউজের সূত্র ধরে একটি প্রতিবেদন প্রকাশ করে। প্রকাশিত প্রতিবেদনে জানা যাচ্ছে ক্রিশ্চিয়ানো রোনালদো দেড় মিলিয়ন টাকায় রোনালদো তার গোল্ডেন বুটজোড়া বিক্রি করে দেয় ফিলিস্তিনি শিশুদের সাহায্যের জন্য।

কিন্তু ১৩ই অক্টোবর ২০১৫ সালে Bleacher Report প্রকাশিত প্রতিবেদনে দেখা যাচ্ছে ক্রিশিয়ানো রোনালদো তার জেতা চারটি গোল্ডেন বুট-এর প্রদর্শনী করছেন।

১৩ই অক্টোবর, ২০১৫ সালে রোনালদো তার জেতা চারটা গোল্ডেন বুটের প্রদর্শনীর ছবি তার অফিশিয়াল ফেসবুক পেজে পোস্ট করে। উক্ত পোস্টে তিনি তার ভক্ত-সমর্থক, ক্লাবকে ধন্যবাদ জানান।

এ থেকে বোঝা যায় ২০১২ সালে আন্তর্জাতিকভাবে ভাইরাল হওয়া তথ্যটি গুজব ছিলো। রোনালদো তার গোল্ডেন বুটজোড়া দান করেনি।

তাছাড়া dailytimes, sportskeeda, newsmeter, misbar এর এই প্রতিবেদন গুলো থেকেও,  রোনালদোর গোল্ডেন বুট দান করার পক্ষে কোন প্রমাণ খুঁজে পাওয়া যায় নি। এ বিষয়ে

dailytimes, sportskeeda, newsmeter, misbar এর প্রতিবেদনগুলো দেখুন।

তাছাড়া সাম্প্রতিক সময়েও রোনালদোর গোল্ডেন বুট দান করার কোন তথ্য পাওয়া যায়নি।

তাই বলা যায় রোনালদো তার গোল্ডেন বুট ফিলিস্তিনি শিশুদের জন্য দান করেননি। ভাইরাল পোস্টে করা এই দাবিটি গুজব।

 

দাবি ৪: সৌদি রাষ্ট্রপতি কি রোনালদোকে কোর উপহার দিয়েছিলেন?

 

ভাইরাল পোস্টে দাবি করা হয়, রোনালদোর উদারতা দেখে সৌদি রাষ্ট্রপতি তাকে কোরআন উপহার দেন।

২১ এপ্রিল, ২০১৩ সালে আরাবিয়ান নিউজ Ra2ed প্রকাশিত একটি প্রতিবেদনে দেখা যাচ্ছে ক্রিশ্চিয়ানো রোনালদোকে কোরআন উপহার দেয়া হচ্ছে। তবে এই উপহারটি সৌদির রাষ্ট্রপতি বা রাজা দেননি। উক্ত প্রতিবেদন থেকে জানা যাচ্ছে ক্রিশ্চিয়ানো রোনালদোকে কোরআন উপহার দিচ্ছে সৌদি আরবের “Mobily” নামক টেলিকম কোম্পানি। রোনালদো উক্ত টেলিকম কোম্পানির সাথে সৌদি আরবে ফোর-জি নেটওয়ার্কের বিজ্ঞাপনের জন্য চুক্তিবদ্ধ হন।

 

 

দাবি ৫: রোনালদো কি ম্যানচেস্টারের বাড়ি বেচে সিরিয়ায় হাজার ঘর তৈরি করে দিয়েছেন?

 

ভাইরাল পোস্টে দাবি করা হয় ক্রিশ্চিয়ানো রোনালদো তার মানচেস্টারের বাড়ি বিক্রি করে সিরিয়ায় ৫ হাজার ঘর তৈরি করে দেন এবং সিরিয়ার মুসলিম বাচ্চাদের পাশে দাঁড়ান।

১২ই জানুয়ারী,২০১৯ সালে Daily mail প্রকাশিত প্রতিবেদন থেকে জানা যাচ্ছে ক্রিশ্চিয়ানো রোনালদো ৩.২৫ মিলিয়ন ইউরোতে তার ম্যানচেস্টারের বাড়িটি বিক্রি করে দেন। তিনি ২০০৮ সালে বাড়িটি ৩.৮৯৫ মিলিয়ন ইউরোতে বাড়িটি কিনেছিলেন। অর্থ্যৎ তিনি ৬৪৫ হাজার ইউরো লোকসানে বাড়িটি বিক্রি করেছেন।

DailyMail ছাড়াও Manchester Evening News, Mirror Uk তেও একই ধরনের প্রতিবেদন পাওয়া যাচ্ছে।

কিন্তু ফ্যাক্টওয়াচের অনুসন্ধানে কোথাও পাওয়া যায়নি যে, তিনি তার বাড়ি বিক্রির টাকা কোথাও অনুদান হিসেবে দিয়েছেন।

তবে ২৩শে ডিসেম্বর,২০১৬ সালে ESPN প্রকাশিত একটা প্রতিবেদন থেকে জানা যাচ্ছে রোনালদো সিরিয়ান শিশুদের সহায়তার জন্য সেভ দ্য চিলড্রেন নামক সংস্থায় অনুদান প্রদান করেন। রোনালদোর অনুদানের বিষয়টি স্বীকার করেন সেভ দ্য চিলড্রেনের ডিরেক্টর নিক ফিননে। রোনালদোর অনুদানের টাকা সিরিয়ান শিশুদের খাদ্য, বস্ত্র এবং চিকিৎসায় ব্যয় করা হয়।

ESPN প্রকাশিত প্রতিবেদন দেখুন এখানে-

তাছাড়া ২৩ ডিসেম্বর,২০১৬ সালে রোনালদো তার অফিশিয়াল টুইটার একাউন্ট থেকে সিরিয়ান শিশুদের উদ্দেশ্যে একটা ভিডিও বার্তা পোস্ট করেন। সেখানে তিনি বলেন “এটা সিরিয়ার শিশুদের জন্য। আমরা জানি তোমরা অনেক কষ্ট পেয়েছো। আমি খুব বিখ্যাত খেলোয়াড়, কিন্তু তোমরাই সত্যিকারের নায়ক। তোমরা আশা হারাবে না। পৃথিবী তোমাদের সাথে আছে। আমরা তোমাদের বিষয়ে যত্নশীল. আমি তোমাদের সঙ্গে আছি।”

 

অতএব এই আলোচনা থেকে বলা যায় রোনালদো সিরিয়ান শিশুদের জন্য অনুদান দিয়েছিলেন। কিন্তু তিনি তার বাড়ি বিক্রির টাকা অনুদান হিসেবে দিয়েছেন এমন কোন প্রমাণ নেই। তাছাড়া ভাইরাল পোস্টে কোন নির্ভরযোগ্য সূত্রেরও উল্লেখ করা হয়নি। তাই বলা যায় দাবীটি “বিভ্রান্তিকর”।

 

দাবি ৬: নেপালে ভূমিকম্পে রোনালদোর অনুদান

২০১৫ সালের ২৫ এপ্রিল নেপালে ৮.১ মাত্রার ভূমিকম্প সংঘটিত হয়। এতে ৬৫০০ জনের অধিক মানুষ নিহত হয়। ভূমিকম্পের ফলে নেপালে চরম মানবিক বিপর্যয় দেখা দেয়। নেপালে ঐতিহাসিক স্থাপনাসহ বিভিন্ন অবকাঠামোর ক্ষতি হয়। এই বিপর্যয়ের ফলে জাতিসংঘসহ বিভিন্ন সরকারী-বেসরকারী সংস্থা এবং বিশ্বের বিভিন্ন খ্যাতিমান ব্যক্তিরা সাহায্যের জন্য এগিয়ে আসেন।

নেপালের ভূমিকম্প নিয়ে বিস্তারিত দেখুন উইকিপিডিয়ায়

 

ভাইরাল পোস্টে দাবি করা হয়, ফুটবলার রোনালদো নেপালকে বাংলাদেশী টাকায় ৬১ কোটি ১৩ লক্ষ ৬৫ হাজার ৪ শত ৯৫ টাকা ২০ পয়সা দান করেছেন। Exchange Rates নামক একটা ওয়েবসাইট থেকে জানা যাচ্ছে ২০১৫ সালের মে মাসে বাংলাদেশে গড় ডলারের দাম ছিলো ৭৮ টাকা। আমরা যদি ডলারের দাম ৭৮ টাকা ধরি তাহলে ৬১ কোটি ১৩ লক্ষ ৬৫ হাজার ৪ শত ৯৫ টাকার দাম হয় প্রায় ৭.৮৭ মিলিয়ন ডলার যা প্রায় ৮ মিলিয়ন ডলারের কাছাকাছি অর্থ্যৎ ৭.৮৭~৮ মিলিয়ন ডলার।

১৪ই মে ২০১৫ সালে Reuters এ একটি প্রতিবেদন প্রকাশ হয় যার শিরোনাম ছিলো “ফুটবলার রোনালদো নেপালের পক্ষে প্রচারণা চালাচ্ছেন কিন্তু মিলিয়ন ডলারের অনুদান মিথ্যা।

উক্ত প্রতিবেদনে বলা হয় ক্রিশ্চিয়ানো রোনালদো নেপালে ভূমিকম্পে ক্ষতিগ্রস্থদের সেবায় বিভিন্ন প্রচারণা চালাচ্ছেন। কিন্তু সেভ দ্য চিলড্রেন এক বক্তব্যে নিশ্চিত করেছে রোনালদো নেপালে ক্ষতিগ্রস্থদের সেবায় ৭ মিলিয়ন ডলারের কোন অর্থ সহায়তা দেননি। উল্লেখ্য প্রতিবেদন থেকে জানা যায় রোনালদো সে সময় সেভ দ্য চিলড্রেনের গ্লোবাল এম্বাসেডর ছিলেন। Reuters এর প্রতিবেদন দেখুন এখানে-

Reuters ছাড়াও Washington Post এবং SBS News এ একই নিউজ পাওয়া যাচ্ছে।


তাছাড়া Dailytimes এর ২০১৮ সালের ২৪ আগস্ট প্রকাশিত প্রতিবেদনেও নেপালের ভূমিকম্পে রোনালদোর অর্থ সহায়তার দাবিটিকে গুজব বলেছে।

অতএব উক্ত আলোচনা থেকে এটা বলা যায়, নেপালে ভূমিকম্পে রোনালদো অর্থ সংগ্রহে ভুমিকা রাখলেও তিনি নিজে ৮ মিলিয়ন ডলার দান করেন নি।

দাবি ৭: রোনালদোর চুল কাটার পেছনে কোন কারণ আছে?

ভাইরাল পোস্টে দাবি করা হচ্ছে, রোনালদোর চুলের স্টাইলে তার ডান কানের পাশে দুটো দাগ দেখা গিয়েছে। রোনালদো এমনভাবে চুল কেটেছেন ক্যান্সারে-আক্রান্ত একটি বাচ্চার জন্য যার চিকিৎসা শেষে তার মাথায় দুইটা ক্ষত ছিলো। রোনালদো সেই বাচ্চার চিকিৎসায় অর্থ সহায়তা করেছিলেন।

১২ই মার্চ ২০১৪ সালে আমেরিকান সংবাদ মাধ্যম FOR THE WIN এর প্রকাশিত একটি প্রতিবেদন থেকে জানা যাচ্ছে রোনালদো একটা শিশুর মস্তিস্কের জটিল রোগের চিকিৎসা ভার বহন করেন। শিশুটির নাম এরিক অর্তিজ ক্রুজ। রোনালদো শিশুটির চিকিৎসায় ৮৩ হাজার ডলার অর্থ সহায়তা করেন।

তবে BBC Trending এবং Independent  UK এর প্রতিবেদনে বলা হচ্ছে রোনালদো এরিকের জন্য এমন করে চুল কেটেছেন নাকি নাকি অন্য কোন কারণ আছে তা নিশ্চিত হওয়া যায়নি। রোনালদো এ বিষয়ে কোথাও কিছু বলেননি। রোনালদোর ঘনিষ্ঠজনরাও এ বিষয়ে কোন মন্তব্য করেন নি।

যেহেতু রোনালদো এমন স্টাইলে চুল কাটার কারণ উল্লেখ করেননি তাছাড়া তার কাছের কোন সূত্র থেকেও কারণ জানা যায়নি, তাই বলা যায় ভাইরাল হওয়া দাবীটি “বিভ্রান্তিকর”।

যেহেতু ভাইরাল হওয়া পোস্টের মধ্যে কমপক্ষে ৪ টা দাবি মিথ্যা এবং ৩ টা দাবি বিভ্রান্তিকর ।  যেহেতু সবগুলো দাবি একটি পোস্টে পাওয়া যাচ্ছে, তাই ফ্যাক্টওয়াচ এই ভাইরাল পোস্টগুলোকে একত্রে “আংশিক মিথ্যা” হিসেবে চিহ্নিত করছে।

আপনি কি এমন কোন খবর দেখেছেন যার সত্যতা যাচাই করা প্রয়োজন?
কোন বিভ্রান্তিকর ছবি/ভিডিও পেয়েছেন?
নেটে ছড়িয়ে পড়া কোন গুজব কি চোখে পড়েছে?

এসবের সত্যতা যাচাই করতে আমাদেরকে জানান।
আমাদেরকে ইমেইল করুনঃ contact@factwatch.org
অথবা ফেইসবুকে মেসেজ দিনঃ facebook.com/fwatch.bangladesh