ছেলের সামনে বাবাকে হত্যা করার ঘটনাটি বাংলাদেশের নয়

Published on: April 18, 2024

যা ছড়িয়েছে: ঈদের কেনাকাটা শেষে ফিরছিলেন, এমন সময় ছেলের সামনেই বাবাকে কুপিয়ে হত্যা করা হয়েছে। ঘটনাটি বাংলাদেশে ঘটেছে। 

ফ্যাক্টওয়াচের সিদ্ধান্ত: দাবিটি বিভ্রান্তিকর। ছেলের সামনেই বাবাকে কুপিয়ে হত্যা করার ঘটনাটি বাংলাদেশের নয়। মূল ঘটনাটি ঘটেছে ভারতের নদীয়ার নাকাশিপাড়া থানার হরনগর গ্রাম পঞ্চায়েতের ঘুর্নি এলাকায়। কিন্তু ফেসবুকে ছড়িয়ে পড়া এসব সংবাদের শিরোনামে নির্দিষ্ট কোনো দেশ বা স্থানের উল্লেখ নেই। যে কারণে সংবাদটি দেখে প্রাথমিকভাবে মনে হচ্ছে এটি হয়তো বাংলাদেশের ঘটনা। যার ফলে সাধারণ ব্যবহারকারীদের অনেকে বিষয়টি বাংলাদেশের ঘটনা ভেবেছেন। অনেকেই আবার ঘটনাটির জন্য বাংলাদেশের বিচার ব্যবস্থাকে দায়ী করেছেন।

 ফেসবুকে ছড়িয়ে পড়া এমন কয়েকটি পোস্ট দেখুন এখানে, এখানে, এখানে, এখানে এবং এখানে। 

ফেসবুকে আলোচিত সংবাদটি বাংলাদেশের মূলধারার কয়েকটি গণমাধ্যমে “ঈদের কেনাকাটা শেষে ফিরছিলেন, ছেলের সামনেই বাবাকে এলোপাতাড়ি কুপিয়ে হত্যা” বা “ঈদের কেনাকাটা শেষে ফেরার পথে ৮ বছরের ছেলের সামনে বাবাকে হত্যা” ইত্যাদি শিরোনামে প্রকাশিত হয়েছে। সংবাদটির সাথে একটি ফটোকার্ড ব্যবহার করা হয়েছে। ফটোকার্ডটিতে প্রতীকী ছবি ব্যবহার করা হয়েছে। উক্ত সংবাদটির বিস্তারিত অংশে যেয়ে দেখা যায়, ঘটনাটি ভারতের নদীয়ার নাকাশিপাড়া থানার হরনগর গ্রাম পঞ্চায়েতের ঘুর্নি এলাকায় ঘটেছে। যদিও শিরোনামে কোনো স্থানের নাম উল্লেখ করা হয়নি। 

ঘটনাটি সম্পর্কে ভারতীয় গণমাধ্যমে কি বলা হয়েছে তা জানতে প্রাসঙ্গিক কিছু কি-ওয়ার্ড ব্যবহার করে গুগলে সার্চ করা হয়। সেখানে দেখা যায়, The Indian Express থেকে প্রকাশিত একটি প্রতিবেদনে শিরোনাম হিসেবে ব্যবহার হয়েছে, “TMC worker murdered in West Bengal’s Nadia ahead of Lok Sabha elections” 

Hindustan times Bangla থেকে প্রকাশিত প্রতিবেদনে শিরোনাম হিসেবে ব্যবহার হয়েছে, “ইদের বাজার করে ফেরার পথে হামলা, ৮ বছরের ছেলের সামনেই TMC (তৃণমূলকর্মীকে) কর্মীকে কুপিয়ে খুন” অপরদিকে একই সংবাদ নিয়ে abplive.com থেকে প্রকাশিত প্রতিবেদনে শিরোনাম হিসেবে ব্যবহার হয়েছে, “Lok Sabha Polls 2024: বাড়ি ফেরার সময় ধারাল অস্ত্রের কোপ, নদিয়ার TMC কর্মী খুন”। 

লক্ষনীয় যে, ভারতে ঘটে যাওয়া ঘটনাটি নিয়ে ভারতীয় গণমাধ্যমে যে সকল প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়েছে সেখানে সংবাদের শিরোনামেই ঘটনাস্থল এবং কে খুন হয়েছেন তা উল্লেখ আছে। অথচ বাংলাদেশের গণমাধ্যমের শিরোনামে স্থানে বা ব্যক্তির পরিচয় উল্লেখ নেই। যার ফলে স্বভাবতই জনসাধারণ বিভ্রান্ত হয়েছেন। বিভ্রান্তির কিছু নমুনা নিচে দেখানো হলো:

 সুতরাং, সবকিছু বিবেচনা করে ফেসবুকে ভাইরাল হওয়া সংবাদটিকে ফ্যাক্টওয়াচ “বিভ্রান্তিকর” হিসেবে সাব্যস্ত করেছে। 

এই নিবন্ধটি ফেসবুকের ফ্যাক্ট-চেকিং প্রোগ্রামের নীতি মেনে লেখা হয়েছে।।
এর উপর ভিত্তি করে ফেসবুক যে ধরণের বিধিনিষেধ আরোপ করতে পারে, সে সম্পর্কে বিস্তারিত জানুন এখানে
এছাড়া এই নিবন্ধ সম্পর্কে আপনার মূল্যায়ন, সম্পাদনা কিংবা আরোপিত বিধিনিষেধ তুলে নেয়ার জন্য আবেদন করতে এই লিঙ্কের সাহায্য নিন।

কোনো তথ্যের সত্যতা যাচাই করতে আমাদেরকেঃ
ইমেইল করুনঃ contact@factwatch.org
অথবা ফেইসবুকে মেসেজ দিনঃ facebook.com/fwatch.bangladesh