চিতাবাঘের সাথে শিশুর বসে থাকার ভাইরাল ছবিটি কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা দিয়ে বানানো

Published on: April 22, 2024

সম্প্রতি ফেসবুকে একজন মেয়েশিশু ও একটি চিতাবাঘের একসাথে বসে থাকার ছবি ভাইরাল হয়েছে যেখানে দাবি করা হচ্ছে পাকিস্তানের গুলমিনা নামক মেয়েটির পোষা চিতাবাঘের সাথে বসে থাকার ছবিটি হলিউডের কোনো অ্যানিমেশন নয়, বরং বাস্তব ঘটনা। ফ্যাক্টওয়াচের অনুসন্ধানে দেখা যাচ্ছে, ছবিটি একজন ইনস্টাগ্রামভিত্তিক সিজিআই আর্টিস্ট মিডজার্নি নামক কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার প্রোগ্রাম দিয়ে তৈরি করে সর্বপ্রথম আপলোড করেছিলেন। পরবর্তীতে মেয়েটিকে গুলমিনা নাম ও চিতাবাঘকে বিড়াল ভেবে বড় করার একটি ঘটনা সাজিয়ে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ভাইরাল করা হয়। তাই ফ্যাক্টওয়াচ এ পোস্টকে “বিভ্রান্তিকর” আখ্যা দিচ্ছে।

বিভ্রান্তির উৎস

এ মাসের প্রথম সপ্তাহ থেকে ফেসবুকে পোস্টটি ভাইরাল হতে থাকে। কিছু পোস্ট দেখুন এখানে, এখানে, এখানে, এখানে, এখানে, এখানে। 

ফ্যাক্টওয়াচ অনুসন্ধান 

রিভার্স ইমেজ সার্চ করে ছবিটির মূল উৎস খুঁজে পাওয়া যায় babrakk নামক একটি ইনস্টাগ্রাম অ্যাকাউন্টে। এ বছর ২৪ মার্চ ছবিটি এই ইনস্টাগ্রাম অ্যাকাউন্ট থেকে সর্বপ্রথম পোস্ট করা হয়। ছবির ক্যাপশনে লেখা রয়েছে – শিরিন ও তার হিংস্র সঙ্গী। ছবিতে ‘কী করে ছবিটি তুললেন’ এমন প্রশ্নের উত্তরে মূল পোস্টদাতা কমেন্ট করেন – মিডজার্নির সাহায্যে

মিডজার্নি (Midjourney) একটি কৃত্তিম বুদ্ধিমত্তা প্রোগ্রাম যার সাহায্যে লিখিত কমান্ডের মাধ্যমে বিভিন্ন ছবি বা আর্টওয়ার্ক তৈরি করা যায়। 

উক্ত ইনস্টাগ্রাম অ্যাকাউন্ট ঘেঁটে দেখা যাচ্ছে এটি একজন CGI আর্টিস্টের অ্যাকাউন্ট এবং এখান থেকে নিয়মিত কৃত্তিম বুদ্ধিমত্তার সাহায্যে তৈরি ছবি আপলোড করা হয়। ভাইরাল ছবিটির ব্যাপারে এ আর্টিস্ট একটি ইনস্টাগ্রাম স্টোরি শেয়ার করেন যেখানে বলেছেন – মিডজার্নিকে ধন্যবাদ এমন নিখুঁত ছবি বানানোর সক্ষমতার জন্য। মানুষ একে সত্যিকার ছবি ভেবে বিভ্রান্ত হচ্ছে। 

মূল আর্টিস্ট কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার সাহায্যে তৈরি এ ছবির মেয়েটির নাম “শিরিন” দিলেও ফেসবুকে তা গুলমিনা নামে ভাইরাল হয়েছে। সাথে চিতাবাঘকে বিড়াল ভেবে বড় করার একটি গল্প জুড়ে দেওয়া হয়েছে। ইংরেজি ভাষাতেও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে এ গুজব ছড়িয়েছে। India Today এবং Factly-এ দুটো তথ্যযাচাইকারী প্রতিষ্ঠান তাদের প্রতিবেদনে এ ভাইরাল ছবি কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা দিয়ে তৈরি বলে নিশ্চিত করেছে। 

সার্বিক বিবেচনায় ফ্যাক্টওয়াচ এ পোস্টকে বিভ্রান্তিকর সাব্যস্ত করছে।

এই নিবন্ধটি ফেসবুকের ফ্যাক্ট-চেকিং প্রোগ্রামের নীতি মেনে লেখা হয়েছে।।
এর উপর ভিত্তি করে ফেসবুক যে ধরণের বিধিনিষেধ আরোপ করতে পারে, সে সম্পর্কে বিস্তারিত জানুন এখানে
এছাড়া এই নিবন্ধ সম্পর্কে আপনার মূল্যায়ন, সম্পাদনা কিংবা আরোপিত বিধিনিষেধ তুলে নেয়ার জন্য আবেদন করতে এই লিঙ্কের সাহায্য নিন।

কোনো তথ্যের সত্যতা যাচাই করতে আমাদেরকেঃ
ইমেইল করুনঃ contact@factwatch.org
অথবা ফেইসবুকে মেসেজ দিনঃ facebook.com/fwatch.bangladesh