ছিনতাইকৃত জাহাজ উদ্ধারের ভিডিও নয়, বরং জাহাজ ছিনতাইয়ের ভিডিও এটি

Published on: March 22, 2024

সম্প্রতি সামাজিক মাধ্যম ফেসবুকে একটি ভিডিও ভাইরাল হয়েছে, যার ক্যাপশনে বলা হয়েছে পূর্বে ছিনতাই হওয়া জাহাজটি যেভাবে উদ্ধার হয়েছে। অনুসন্ধান করে দেখা যাচ্ছে, উক্ত ক্যাপশনে যেই ভিডিওটি ভাইরাল হয়েছে তা কোনো জাহাজ উদ্ধারের নয় বরং জাহাজ ছিনতাইয়ের। ১৯ নভেম্বর ২০২৩ তারিখে লোহিত সাগরে  কার্গো জাহাজটি ধাওয়া করে আটক করে হুতি যোদ্ধারা। হুতি যোদ্ধারাই জাহাজ আটকের ভিডিওটি প্রকাশ করে। অথচ ক্যাপশনটি দেখে অনেক ব্যবহারকারী ভাবছেন ভারতীয় নৌ বাহিনি জাহাজটি উদ্ধারের অভিযান পরিচালনা করেছে। কেননা সাম্প্রতিক সময়ে সোমালিয়ান দস্যুদের থেকে ভারতীয় নৌ বাহিনি “এমভি রুয়েন”  নামের একটি জাহাজ উদ্ধার করেছে। তাই সঙ্গত কারণে ফ্যাক্টওয়াচ সামাজিক মাধ্যমে ভাইরাল এমন দাবিকে “বিভ্রান্তিকর” বলে সাব্যস্ত করছে।

এমন কয়েকটি পোস্টের নমুনা দেখুন এখানেএখানেএখানে এবং এখানে

ফ্যাক্ট ওয়াচের অনুসন্ধানঃ 

উক্ত ক্যাপশনে শেয়ারকৃত ভিডিওটির বিষয়ে বিস্তারিত জানতে স্ক্রিনশট নিয়ে গুগলে রিভার্স ইমেজ সার্চ করা হয়। সেখানে থেকে পাওয়া যায়, লোহিত সাগরের দক্ষিণাঞ্চল থেকে বাহামার পতাকাবাহী গ্যালাক্সি লিডার নামে কার্গো জাহাজ দখল করে হুতি যোদ্ধারা। যেভাবে জাহাজটি জব্দ করা হয়েছে তার ভিডিও ধারণ করে হুতি যোদ্ধারা। জাহাজ দখলের একদিন পরে ভিডিওটি প্রকাশ করেছে তারা। আল-মাসিরাহ নামে একটি টেলিভিশন চ্যানেলে জাহাজ ছিনতাইয়ের ওই ভিডিও প্রকাশ করা হয়। বিস্তারিত জানতে পারবেন এখানে, এখানে এবং এখানে

প্রকাশিত ভিডিওটিতে দেখা যাচ্ছে, মাঝ সাগরে জাহাজটির দিকে উড়ে আসছে একটি সামরিক হেলিকপ্টার। তারপর সেটি থেকে জাহাজের ডেকের ওপর বেশ কয়েকজন সশস্ত্র মুখোশধারী লাফিয়ে পড়েছে। ডেকে নেমে এসে একে একে জাহাজের সব ক্রুকে আটক করেছে। এক পর্যায়ে জাহাজটির পুরো নিয়ন্ত্রণ নিয়ে নিয়েছে। এরপরে কয়েকটি দ্রুত গতির স্পিড বোট জাহাজটিকে এসকর্ট করে নিয়ে যায়।

উল্লেখ্য, জাহাজটি যুক্তরাজ্যের মালিকানাধীন। এটি পরিচালনা করছে জাপান। এর মালিকানায় ইসরায়েলি এক ব্যবসায়ীর অংশীদারত্ব রয়েছে। আরও জানুন এখানে

এখানে লক্ষণীয় যে, জাহাজ দখল করে যেই ভিডিও হুতি যোদ্ধারা প্রকাশ করেছিল ঠিক সেই ভিডিও বর্তমানে জাহাজ উদ্ধারের ভিডিও বা ভারতীয় সৈন্যরা যেভাবে জিম্মি জাহাজ জলদস্যুদের হাত থেকে উদ্ধার করেছে ইত্যাদি ক্যাপশনে ভাইরাল হয়েছে।

সুতরাং যথার্থ তথ্য-উপাত্তের ভিত্তি করে এ ধরণের ক্যাপশনগুলোকে ফ্যাক্টওয়াচ “বিভ্রান্তিকর” সাব্যস্ত করেছে।

এই নিবন্ধটি ফেসবুকের ফ্যাক্ট-চেকিং প্রোগ্রামের নীতি মেনে লেখা হয়েছে।।
এর উপর ভিত্তি করে ফেসবুক যে ধরণের বিধিনিষেধ আরোপ করতে পারে, সে সম্পর্কে বিস্তারিত জানুন এখানে
এছাড়া এই নিবন্ধ সম্পর্কে আপনার মূল্যায়ন, সম্পাদনা কিংবা আরোপিত বিধিনিষেধ তুলে নেয়ার জন্য আবেদন করতে এই লিঙ্কের সাহায্য নিন।

কোনো তথ্যের সত্যতা যাচাই করতে আমাদেরকেঃ
ইমেইল করুনঃ contact@factwatch.org
অথবা ফেইসবুকে মেসেজ দিনঃ facebook.com/fwatch.bangladesh