‘এনসিপি নেত্রী ডা. মাহমুদা মিতুর চুমু খাওয়া ছবি ভাইরাল’ - জাতীয় দৈনিক কালের কণ্ঠের একটি ফটোকার্ডের বরাতে এমন একটি খবর অনলাইনে ছড়িয়ে পড়েছে। তবে অনুসন্ধানে দেখা যাচ্ছে, দৈনিক কালের কণ্ঠের ফেসবুক পেজ বা ওয়েবসাইট থেকে এমন কোনো ফটোকার্ড বা প্রতিবেদন প্রকাশ করা হয়নি। ডা মাহমুদা মিতু নিজেও তার ব্যক্তিগত ফেসবুক প্রফাইল থেকে এই ফটোকার্ডের প্রতিবাদ জানিয়েছেন। সঙ্গত কারনে ফ্যাক্টওয়াচ এই সকল ফটোকার্ডকে ‘বিকৃত’ সাব্যস্ত করছে।
দৈনিক কালের কণ্ঠের ফটোকার্ডের আদলে তৈরি এসব ফটোকার্ডে শিরোনাম ছিল, ‘এনসিপি থেকে ডা মাহমুদা মিতুর চুমু খাওয়া ছবি ভাইরাল। রুপায়ন টাওয়ারে অসন্তোষ’
অনুসন্ধান
ছড়িয়ে পড়া এই ফটোকার্ডে তারিখ হিসেবে ‘২৮ নভেম্বর ২০২৫’ উল্লেখ করা হয়েছে। কালের কন্ঠের ভেরিফায়েড ফেসবুক পেজ ঘেটে দেখা যাচ্ছে, ২৮ নভেম্বর সর্বমোট ১৯২ টা ফটোকার্ড আপলোড করা হয়েছিল। তবে এর মধ্যে ফেসবুকে ছড়িয়ে পড়া উক্ত ফটোকার্ডটি ছিল না।
এছাড়া, কালের কন্ঠে সংবাদ শিরোনাম হিসেবে যেসব ফটোকার্ড প্রকাশিত হয়, সেসব কার্ড পর্যালোচনা করে দেখা যাচ্ছে, এসব ক্ষেত্রে ২ বা ৩ লাইনে শিরোনাম করা হয়। বাক্যের ভেতরে কখনো কখনো কমা চিহ্ন (,) ব্যবহার করা হয়। তবে শিরোনামের ভেতরে বা শেষে কোথাও দাড়ি চিহ্ন (।) ব্যবহার করতে দেখা যায়না। এমন কয়েকটি নমুনা ফটোকার্ড দেখুন এখানে,এখানে,এখানে।
কিন্তু ডা. মাহমুদা মিতু সম্পর্কিত আলোচিত ফটোকার্ডে শিরোনামের মাঝেই দাড়ি বা পূর্ণচ্ছেদ চিহ্ন দেখা যাচ্ছে, যা কালের কণ্ঠের আসল ফটোকার্ডগুলোর সাথে সামঞ্জস্যপূর্ণ নয়। এছাড়া, ব্যবহৃত ফন্টেও অমিল লক্ষণীয়। অর্থাৎ,এটা নিশ্চিতভাবে বলা যায় যে,কালের কণ্ঠের ভিন্ন কোনো ফটোকার্ড ডিজিটালি এডিট করে এই নকল কার্ড তৈরি করা হয়েছে।
দৈনিক কালের কণ্ঠের ওয়েবসাইটেও এমন কোনো সংবাদ খুঁজে পাওয়া যায়নি।
তদুপরি,২৮ নভেম্বর বিকাল ৫টা ১২ মিনিটে ডাক্তার মাহমুদা মিতু নিজের ফেসবুক প্রোফাইল থেকে এমন কয়েকটি ভুয়া ফটোকার্ড ও পোস্টের স্ক্রিনশট পোস্ট করে দাবি করেন, জনৈক ডাক্তার আসিফ এসবের মাধ্যমে ‘বাড়াবাড়ি’ করছে।
এছাড়া ডা মাহমুদা মিতুকে নিয়ে কালের কণ্ঠের লোগোযুক্ত ভিন্ন আরেকটি ফটোকার্ড ছড়িয়ে পড়তে দেখা গিয়েছে। যেমন দেখুন এখানে,এখানে।
এসব কার্ডের শিরোনাম ছিল- ‘বয়ফ্রেন্ডের সঙ্গে আপত্তিকর অবস্থায় আটক মেডিকেল শিক্ষার্থী, এলাকাবাসীর গণধোলাই’। এই কার্ডে তারিখ হিসেবে ‘৮ নভেম্বর ২০২১’ লেখা রয়েছে।
এই ফটোকার্ডেও একাধিক অসঙ্গতি দেখা যাচ্ছে।
প্রথমত, বাংলাদেশের সংবাদমাধ্যমগুলো ফটোকার্ড ব্যবহার শুরু করেছিল ২০২৩ থেকে। কাজেই ২০২১ সালে কোনো ফটোকার্ড প্রকাশিত হওয়ার কথা নয়। বিভিন্ন কি-ওয়ার্ড ব্যবহার করে কালের কণ্ঠের ২০২১ সালে প্রকাশিত বিভিন্ন খবর যাচাই করে দেখা গেল, ফেসবুক পেজ থেকে তখন ভিন্ন উপায়ে খবর প্রকাশ করা হত। (দেখুন এখানে,এখানে) অর্থাৎ, ২০২১ সালের তারিখযুক্ত এসব ফটোকার্ড ভুয়া।
দ্বিতীয়ত, এই শিরোনামেও বাক্যের শেষে দাড়ি বা পূর্ণচ্ছেদ চিহ্ন রয়েছে, যা কালের কণ্ঠের অন্যান্য সাধারণ ফটোকার্ডে ব্যবহার করা হয় না।
তৃতীয়ত, এই কার্ডে ব্যবহৃত ফন্ট কালের কণ্ঠে ব্যবহৃত নিয়মিত ফন্টের চেয়ে ভিন্ন।
সার্বিক বিবেচনায় ফ্যাক্টওয়াচ এই ফটোকার্ডগুলোকে ‘বিকৃত’ সাব্যস্ত করেছে।
Claim: ‘এনসিপি নেত্রী ডা. মাহমুদা মিতুর চুমু খাওয়া ছবি ভাইরাল’ - জাতীয় দৈনিক কালের কণ্ঠের একটি ফটোকার্ডের বরাতে এমন একটি খবর অনলাইনে ছড়িয়ে পড়েছে।
Claimed By: Facebook Users
Rating: Mostly false
এই নিবন্ধটি ফেসবুকের ফ্যাক্ট-চেকিং প্রোগ্রামের
নীতি মেনে লেখা হয়েছে। এর উপর ভিত্তি করে ফেসবুক যে ধরণের বিধিনিষেধ আরোপ করতে পারে, সে সম্পর্কে বিস্তারিত জানুন এখানে।
এছাড়া এই নিবন্ধ সম্পর্কে আপনার মূল্যায়ন, সম্পাদনা কিংবা আরোপিত বিধিনিষেধ তুলে নেয়ার জন্য আবেদন করতে এই লিঙ্কের সাহায্য নিন।
কোনো তথ্যের সত্যতা যাচাই করতে আমাদেরকে ইমেইল করুনঃ contact@fact-watch.org অথবা ফেইসবুকে মেসেজ দিনঃ facebook.com/fwatch.bangladesh