জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) সদস্য সচিব আখতার হোসেন ও জ্যেষ্ঠ যুগ্ম আহ্বায়ক সামান্তা শারমিনের বক্তব্য দাবিতে ফেসবুকে দুটি সংবাদমাধ্যমের নাম ও লোগোযুক্ত আলাদা আলাদা ফটোকার্ড প্রচার করা হচ্ছে। এর মধ্যে একাত্তর টিভির নাম ও লোগোযুক্ত ফটোকার্ডটিতে লেখা, 'আমার জীবনে বড় ভুল ছিলো আওয়ামী লীগের সাথে শত্রুতা করা নাহিদ হাসনাত আমাদের বিপদে ফেলেছে।' দাবি করা হচ্ছে, এটি এনসিপির সদস্য সচিব আখতার হোসেনের বক্তব্য। অপরদিকে কালের কণ্ঠের নাম ও লোগোযুক্ত ফটোকার্ডটিতে লেখা, 'ফাইনালি আজ স্লোগানটি সত্য প্রমাণিত হলো তুমি কে ? আমি কে ? রাজাকার ! রাজাকার!' দাবি করা হচ্ছে, সংবাদমাধ্যমে এমন মন্তব্য করেছেন সামান্তা শারমিন। ফ্যাক্টওয়াচের অনুসন্ধানে দেখা যায়, দাবিগুলো নিয়ে প্রচারিত একাত্তর টিভি ও কালের কণ্ঠের ফটোকার্ড দুটি ভুয়া। সংবাদমাধ্যমগুলো এমন কোনো ফটোকার্ড প্রকাশ করেনি।
এনসিপির সদস্য সচিব আখতার হোসেনকে নিয়ে একাত্তর টিভির নাম ও লোগোযুক্ত ফটোকার্ড
এটি রিভার্স ইমেজ সার্চে একাত্তর টিভির ইউটিউব চ্যানেলে একটি ফটোকার্ড পাওয়া যায়। একই ফটোকার্ড একাত্তর টিভির ভেরিফায়েড ফেসবুক পেজেও ২০ ডিসেম্বর পোস্ট করা হয়েছিল। ফটোকার্ডটির সঙ্গে এনসিপির সদস্য সচিব আখতার হোসেনকে নিয়ে প্রচারিত একাত্তর টিভির নাম ও লোগোযুক্ত ফটোকার্ডটির মিল পাওয়া যায়। মিলগুলোর মধ্যে রয়েছে, দুটি ফটোকার্ডেরই প্রকাশের তারিখ উল্লেখ করা ২০ ডিসেম্বর, আখতার হোসেনের ছবিও একই।
এনসিপির দুই নেতাকে জড়িয়ে সংবাদমাধ্যমের নামে ভুয়া ফটোকার্ড প্রচার
ফটোকার্ড দুটি বিশ্লেষণে ফেসবুকে আখতার হোসেন ও আওয়ামী লীগকে জড়িয়ে প্রচারিত ফটোকার্ডটিতে বেশ কিছু অসঙ্গতিও দেখা যায়। যেমন, একাত্তর টিভির মূল ফটোকার্ডের সঙ্গে এই ফটোকার্ডে ব্যবহৃত ফন্টের অমিল। এ ছাড়া একাধিক বানান ভুলও দেখা যায়। যেমন, ‘জিবনে’, ‘আওয়ামীলীগের’। এই ধরনের ভুল সাধারণত প্রতিষ্ঠিত সংবাদমাধ্যমগুলোকে করতে দেখা যায় না।
এ ছাড়া প্রাসঙ্গিক কি-ওয়ার্ড সার্চে একাত্তর টিভিসহ দেশের কোনো সংবাদমাধ্যমেও আওয়ামী লীগ, হাসনাত আব্দুল্লাহ, নাহিদকে নিয়ে আখতার হোসেনের এমন কোনো মন্তব্য পাওয়া যায়নি।
এসব বিশ্লেষণে স্পষ্ট হয়, এনসিপির সদস্য সচিব আখতার হোসেনকে জড়িয়ে একাত্তর টিভির নাম ও লোগোযুক্ত ‘আমার জীবনে বড় ভুল ছিলো আওয়ামী লীগের সাথে শত্রুতা করা নাহিদ হাসনাত আমাদের বিপদে ফেলেছে।’ শীর্ষক ফটোকার্ডটি এডিটেড।
এনসিপির জ্যেষ্ঠ যুগ্ম আহ্বায়ক সামান্তা শারমিনের বক্তব্য দাবিতে কালের কণ্ঠের নাম ও লোগোযুক্ত ফটোকার্ড
এই ফটোকার্ডটি রিভার্স ইমেজ সার্চে দৈনিক কালের কণ্ঠের ওয়েবসাইটে একটি প্রতিবেদন পাওয়া যায়। এই প্রতিবেদনে সামান্তা শারমিনের বক্তব্যযুক্ত একটি ফটোকার্ড পাওয়া যায়। এই ফটোকার্ডে লেখা, ‘ফাইনালি জামায়াতের সঙ্গে এনসিপি জোটে যাচ্ছে। আগামীকাল রবিবার ঘোষণা দেওয়া হবে।’ ফটোকার্ডটি প্রকাশের তারিখ ২৭ ডিসেম্বর। এটি কালের কণ্ঠের ভেরিফায়েড ফেসবুক পেজেও প্রকাশিত হয়েছে।
এনসিপির দুই নেতাকে জড়িয়ে সংবাদমাধ্যমের নামে ভুয়া ফটোকার্ড প্রচার
অপরদিকে ফেসবুকে সামান্তা শারমিনের বক্তব্য দাবিতে প্রচারিত কালের কণ্ঠের নাম ও লোগোযুক্ত ফটোকার্ডটি প্রকাশের তারিখও ২৭ ডিসেম্বর। দুটি ফটোকার্ডেই সামান্তা শারমিনের একই ছবি ব্যবহার করা হয়েছে। তবে ফটোকার্ড দুটিতে ফন্টের ভিন্নতা দেখা যায়।
এ ছাড়া প্রাসঙ্গিক কি-ওয়ার্ড সার্চে কালের কণ্ঠসহ দেশের কোনো সংবাদমাধ্যমেও সামান্তা শারমিনের ‘ফাইনালি আজ স্লোগানটি সত্য প্রমাণিত হলো তুমি কে ? আমি কে ? রাজাকার ! রাজাকার!’ শীর্ষক কোনো মন্তব্য পাওয়া যায়নি। ফলে এটি নিশ্চিত হওয়া যায়, ভিন্ন শিরোনামের আরেকটি ফটোকার্ড এডিট করে এটি তৈরি করা হয়েছে।
সার্বিক বিশ্লেষণে ফ্যাক্টওয়াচ এনসিপির দুই নেতাকে জড়িয়ে দুই সংবাদমাধ্যমের প্রচারিত ফটোকার্ড দুটিকে বিকৃত হিসেবে রেট করছে।
Claim: জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) সদস্য সচিব আখতার হোসেন ও জ্যেষ্ঠ যুগ্ম আহ্বায়ক সামান্তা শারমিনের বক্তব্য দাবিতে ফেসবুকে দুটি সংবাদমাধ্যমের নাম ও লোগোযুক্ত আলাদা আলাদা ফটোকার্ড প্রচার করা হচ্ছে। এর মধ্যে একাত্তর টিভির নাম ও লোগোযুক্ত ফটোকার্ডটিতে লেখা, 'আমার জীবনে বড় ভুল ছিলো আওয়ামী লীগের সাথে শত্রুতা করা নাহিদ হাসনাত আমাদের বিপদে ফেলেছে।' দাবি করা হচ্ছে, এটি এনসিপির সদস্য সচিব আখতার হোসেনের বক্তব্য। অপরদিকে কালের কণ্ঠের নাম ও লোগোযুক্ত ফটোকার্ডটিতে লেখা, 'ফাইনালি আজ স্লোগানটি সত্য প্রমাণিত হলো তুমি কে ? আমি কে ? রাজাকার ! রাজাকার!' দাবি করা হচ্ছে, সংবাদমাধ্যমে এমন মন্তব্য করেছেন সামান্তা শারমিন।
Claimed By: Facebook Users
Rating: False
এই নিবন্ধটি ফেসবুকের ফ্যাক্ট-চেকিং প্রোগ্রামের
নীতি মেনে লেখা হয়েছে। এর উপর ভিত্তি করে ফেসবুক যে ধরণের বিধিনিষেধ আরোপ করতে পারে, সে সম্পর্কে বিস্তারিত জানুন এখানে।
এছাড়া এই নিবন্ধ সম্পর্কে আপনার মূল্যায়ন, সম্পাদনা কিংবা আরোপিত বিধিনিষেধ তুলে নেয়ার জন্য আবেদন করতে এই লিঙ্কের সাহায্য নিন।
কোনো তথ্যের সত্যতা যাচাই করতে আমাদেরকে ইমেইল করুনঃ contact@fact-watch.org অথবা ফেইসবুকে মেসেজ দিনঃ facebook.com/fwatch.bangladesh