নোয়াখালীতে শিবিরকর্মী আটকের দৃশ্য দাবিতে ডাকসু নির্বাচনের ভিডিও প্রচার

13
নোয়াখালীতে শিবিরকর্মী আটকের দৃশ্য দাবিতে ডাকসু নির্বাচনের ভিডিও প্রচার
নোয়াখালীতে শিবিরকর্মী আটকের দৃশ্য দাবিতে ডাকসু নির্বাচনের ভিডিও প্রচার

সম্প্রতি ফেসবুকে একটি ভিডিও শেয়ার করে ক্যাপশনে উল্লেখ করা হয়, "নোয়াখালীর কাশেম বাজারে জামাত শিবিরের হামলার ঘটনায় মাইজদী শহর থেকে অস্ত্রসহ আটক শিবির কর্মী।" কিন্তু বাস্তবে এটা ডাকসু নির্বাচনের সময় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় এলাকা থেকে ভুয়া সাংবাদিক সন্দেহে একজনকে গ্রেফতার করার ভিডিও। এই ভিডিওর সাথে নোয়াখালী সদর উপজেলায় মসজিদ প্রাঙ্গণে ছাত্রশিবির ও যুবদলের নেতা-কর্মীদের মধ্যে পাল্টাপাল্টি সংঘর্ষের কোনো সম্পর্ক নেই। অন্যদিকে এই ঘটনায় কোনও শিবির কর্মীর গ্রেফতার হওয়া সংক্রান্ত কোনো তথ্য পাওয়া যায়নি।

 

ফেসবুকে ছড়িয়ে পড়া এমন কিছু পোস্ট দেখুন এখানে, এখানে, এখানে, এখানে এবং এখানে। 

ফ্যাক্টওয়াচের অনুসন্ধানঃ 

ফেসবুকে ছড়িয়ে পড়া ভিডিওটি সম্পর্কে জানার জন্য শুরুতেই ভিডিওটি বিশ্লেষণ করা হয়। সেখানে দেখা যায়, পাঞ্জাবি পরিহিত এক ব্যক্তিকে পুলিশ ধরে নিয়ে যাচ্ছে। পাশাপাশি এই ভিডিও সম্পর্কে জনসাধারণ যেই ধারণা নিচ্ছে সে সম্পর্কে জানার জন্য পোস্টগুলোর কমেন্ট সেকশনে দেখা হয়। সেখানে দেখা যায়, অধিকাংশ মানুষ একে নোয়াখালীর মাইজদী শহর থেকে অস্ত্রসহ শিবির কর্মী আটকের ঘটনা বলে মনে করছে। তবে, কিছু মানুষ কমেন্টে উল্লেখ করেছেন যে এটা এটা ২০২৫ সালের ডাকসু নির্বাচনের সময় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় এলাকার ভিডিও। 

এই সূত্র অনুযায়ী প্রাসঙ্গিক কিছু কি-ওয়ার্ড ধরে সার্চ করে মেহেরাব হাসান নামের একটি ফেসবুক প্রোফাইল এবং Dainik Destiny নামের একটি ইউটিউব চ্যানেলে ২০২৫ সালের ৯ সেপ্টেম্বর প্রকাশিত দুইটি ভিডিও পাওয়া যায়। সেখানে উল্লেখ করা হয়, পাঞ্জাবি পরা এক ব্যক্তিকে ভুয়া সাংবাদিক সন্দেহে গ্রেফতার করা হয়েছিল।  ভিডিও দুইটির সাথে ভাইরাল ভিডিওতে গ্রেফতারকৃত ব্যক্তির পাঞ্জাবি, আইডিকার্ড ইত্যাদির হুবহু মিল খুঁজে পাওয়া যায়। এর একটি নমুনা নিচে তুলে ধরা হলঃ 

দেশ টিভি, এটিএন বাংলা নিউজ এবং বার্তা ২৪ এর ইউটিউব চ্যানেলে চলতি বছরের ৯ সেপ্টেম্বর প্রকাশিত আলাদা আলাদা ভিডিও রিপোর্টে পাঞ্জাবি পরা এই একই ব্যক্তিকে দেখা যায়। ভিডিও থেকে আরও জানা যায়, চলতি বছরের ৯ সেপ্টেম্বর ডাকসু নির্বাচনের সময় ভুয়া সাংবাদিক সন্দেহে তাকে গ্রেফতার করা হয়। এটিএন বাংলা নিউজে প্রকাশিত রিপোর্টে এই ব্যক্তিকে বলতে শোনা যায়, “আমি শিবির পছন্দ করিনা, আমাকে ওরা শিবির বানাইবো ভাই আমার পরিচয় দিতে দিন।

উল্লেখ্য, চলতি বছরের ১৯ অক্টোবর নোয়াখালী সদর উপজেলার নেয়াজপুর ইউনিয়নের কাশেমবাজার জামে মসজিদ প্রাঙ্গণে ইসলামী ছাত্রশিবির ও যুবদলের নেতা-কর্মীদের মধ্যে পাল্টাপাল্টি হামলা ও সংঘর্ষ হয়। এর কারণে কোনো শিবির কর্মীকে আটকের তথ্য নির্ভরযোগ্য কোনো মাধ্যম থেকে পাওয়া যায়নি। অন্যদিকে, ফেসবুকে ছড়িয়ে পড়া ভিডিওটি নোয়াখালীর এবং এই ঘটনা অনেক আগের। 

তাই সবকিছু বিবেচনা করে ফ্যাক্টওয়াচ ফেসবুকে ছড়িয়ে পড়া ছবিগুলোর উপর ভিত্তি করে করা দাবিগুলোকে মিথ্যা হিসেবে চিহ্নিত করেছে।

Claim:
সম্প্রতি ফেসবুকে একটি ভিডিও শেয়ার করে ক্যাপশনে উল্লেখ করা হয়, "নোয়াখালীর কাশেম বাজারে জামাত শিবিরের হামলার ঘটনায় মাইজদী শহর থেকে অস্ত্রসহ আটক শিবির কর্মী।"

Claimed By:
Facebook users

Rating:
False

এই নিবন্ধটি ফেসবুকের ফ্যাক্ট-চেকিং প্রোগ্রামের নীতি মেনে লেখা হয়েছে। এর উপর ভিত্তি করে ফেসবুক যে ধরণের বিধিনিষেধ আরোপ করতে পারে, সে সম্পর্কে বিস্তারিত জানুন এখানে

এছাড়া এই নিবন্ধ সম্পর্কে আপনার মূল্যায়ন, সম্পাদনা কিংবা আরোপিত বিধিনিষেধ তুলে নেয়ার জন্য আবেদন করতে এই লিঙ্কের সাহায্য নিন।

কোনো তথ্যের সত্যতা যাচাই করতে আমাদেরকে
ইমেইল করুনঃ contact@fact-watch.org
অথবা ফেইসবুকে মেসেজ দিনঃ facebook.com/fwatch.bangladesh