সিলেটের এমএজি ওসমানী মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতালে হিন্দু ধর্মাবলম্বী এক চিকিৎসক কর্তৃক মুসলিম তরুণীকে ধর্ষণের দাবিতে ফেসবুকে একটি ভিডিও প্রচার করা হচ্ছে। ভিডিওটিতে দাবি করা হচ্ছে, এই তরুণীকে ঘটনা ধামাচাপা দিতে কোটি টাকা অফার করা হচ্ছে। ফ্যাক্টওয়াচের অনুসন্ধানে দেখা যায়, ঘটনা অন্তত দুই বছরের পুরোনো, ২০২২ সালের। এই ঘটনায় অভিযুক্ত চিকিৎসককে গ্রেপ্তারও করা হয়েছিল। সংবাদমাধ্যমের তথ্যানুযায়ী, ভুক্তভোগী এই তরুণীর সঙ্গে অভিযুক্ত চিকিৎসকের প্রেমের সম্পর্ক ছিল এবং তাকে বিয়ের প্রলোভন দেখিয়ে বিভিন্ন সময়ে ধর্ষণ করা হয়।
দাবিটির সত্যতা যাচাইয়ে দেখা যায়, ফেসবুকে প্রচারিত ভিডিওতে দাবিটির বিপরীতে বিভিন্ন সংবাদমাধ্যমের প্রতিবেদনের স্ক্রিনশট দেখানো হয়।
এসব স্ক্রিনশটের সূত্রে প্রাসঙ্গিক কি-ওয়ার্ড সার্চে দৈনিক জনকণ্ঠে হুবহু শিরোনামে একটি প্রতিবেদন পাওয়া যায়। এখান থেকে জানা যায়, এটি ২০২২ সালের ১৭ অক্টোবরের প্রতিবেদন।
বিস্তারিত প্রতিবেদনে ঘটনাটি সম্পর্কে বলা হয়েছে, ‘সিলেটে মানসিক রোগ বিশেষজ্ঞ এক ডাক্তারের লালসার শিকার হয়ে গর্ভবতী হয়ে পড়েছেন এক তরুণী। সেই ডাক্তারের নাম ডা. আর কে এস রয়েল। অভিযোগের পর ওই চিকিৎসককে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য আটক করেছে পুলিশ। নগরীর কাজলশাহ ল্যাবএইড লি. ডায়াগনস্টিক সেন্টার থেকে তাকে আটক করা হয়।’
প্রতিবেদনে সিলেট মহানগর পুলিশের তৎকালীন উপ-কমিশনার (উত্তর) আজবাহার আলী শেখকে উদ্ধৃত করে বলা হয়, ‘অভিযোগকারী ২০১৮ সাল থেকে সিলেটের এ বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকের কাছে চিকিৎসা নিচ্ছেন। একপর্যায়ে ওই তরুণীর প্রতি তিনি আসক্ত হয়ে পড়েন। বিয়ের প্রলোভন দেখিয়ে বিভিন্ন সময় তাকে ধর্ষণ করেন।’
এই ঘটনা নিয়ে ওই সময় একাধিক সংবাদমাধ্যমে প্রতিবেদন পাওয়া যায়। এমন কিছু প্রতিবেদন দেখুন-
এ ছাড়া সম্প্রতি ফেসবুকে প্রচারিত ভিডিওটি থেকে কিছু কি-ফ্রেম নিয়ে রিভার্স ইমেজ সার্চে Sylon TV নামের একটি ইউটিউব চ্যানেলে এটি পাওয়া যায়। ২০২২ সালের ১৯ অক্টোবর চ্যানেলটিতে ভিডিওটি পোস্ট করা হয়। অর্থাৎ ঘটনাটি পুরোনো।
এসব তথ্যের ভিত্তিতে এটি নিশ্চিত হওয়া যায়, সিলেটে হিন্দু ধর্মাবলম্বী এক চিকিৎসক কর্তৃক মুসলিম তরুণীকে ধর্ষণের দাবিতে ফেসবুকে প্রচারিত ভিডিওটি পুরোনো ঘটনার। তাই ফ্যাক্টওয়াচ এই ভিডিওযুক্ত পোস্টগুলোকে বিভ্রান্তিকর হিসেবে সাব্যস্ত করছে।
Claim: সিলেটের এমএজি ওসমানী মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতালে হিন্দু ধর্মাবলম্বী এক চিকিৎসক কর্তৃক মুসলিম তরুণীকে ধর্ষণের দাবিতে ফেসবুকে একটি ভিডিও প্রচার করা হচ্ছে। ভিডিওটিতে দাবি করা হচ্ছে, এই তরুণীকে ঘটনা ধামাচাপা দিতে কোটি টাকা অফার করা হচ্ছে।
Claimed By: Facebook Users
Rating: Mostly false
এই নিবন্ধটি ফেসবুকের ফ্যাক্ট-চেকিং প্রোগ্রামের
নীতি মেনে লেখা হয়েছে। এর উপর ভিত্তি করে ফেসবুক যে ধরণের বিধিনিষেধ আরোপ করতে পারে, সে সম্পর্কে বিস্তারিত জানুন এখানে।
এছাড়া এই নিবন্ধ সম্পর্কে আপনার মূল্যায়ন, সম্পাদনা কিংবা আরোপিত বিধিনিষেধ তুলে নেয়ার জন্য আবেদন করতে এই লিঙ্কের সাহায্য নিন।
কোনো তথ্যের সত্যতা যাচাই করতে আমাদেরকে ইমেইল করুনঃ contact@fact-watch.org অথবা ফেইসবুকে মেসেজ দিনঃ facebook.com/fwatch.bangladesh