সম্প্রতি ফেসবুকে একটি তথ্য ভাইরাল হতে দেখা যাচ্ছে যেখানে দাবি করা হচ্ছে সুইডেন আনুষ্ঠানিকভাবে যৌনক্রিয়াকে খেলা হিসেবে ঘোষণা করেছে। ফ্যাক্টওয়াচের অনুসন্ধানে এই দাবির পক্ষে নির্ভরযোগ্য কোনো তথ্য প্রমাণ পাওয়া যায়নি। সুইডিশ ফেডারেশন অফ সেক্স এর প্রধান ড্রাগান ব্রাটিক (Dragan Bratic) সুইডিশ স্পোর্টস কনফেডারেশন (আরএফ) এর অংশ হওয়ার জন্য একটি আবেদন জমা দিয়েছিলেন। কিন্তু, আরএফ যৌনক্রিয়াকে খেলা হিসেবে অন্তর্ভুক্ত করার আবেদনটি প্রত্যাখ্যান করেছিল। এ কারণে ফ্যাক্টওয়াচ ভাইরাল হওয়া তথ্যটিকে “মিথ্যা” হিসেবে চিহ্নিত করেছে।
সুইডেন আনুষ্ঠানিকভাবে যৌনক্রিয়াকে খেলা হিসেবে ঘোষণা করেছে কি না এ ব্যাপারে নিশ্চিত হওয়ার জন্য প্রাসঙ্গিক কিছু কী-ওয়ার্ড ধরে অনুসন্ধান করা হয়। তবে, অনুসন্ধানে এই দাবির পক্ষে নির্ভরযোগ্য মাধ্যম থেকে কোনো তথ্য পাওয়া যায়নি। প্রথম সারির আন্তর্জাতিক সংবাদমাধ্যমগুলো থেকেও এ সংক্রান্ত কোনো প্রমাণ পাওয়া যায়নি।
এ ব্যাপারে আরও বিস্তারিত ভাবে জানতে সুইডেনের খেলাধুলা সংক্রান্ত সংগঠন সুইডিশ স্পোর্টস কনফেডারেশন (আরএফ) এর অফিশিয়াল ওয়েবসাইটে অনুসন্ধান করা হয়। অনুসন্ধানে দেশটির যৌনক্রিয়াকে খেলা হিসেবে স্বীকৃতি দেয়ার ব্যাপারে কোনো তথ্য পাওয়া যায়নি। তবে সেখানে একটি প্রেস বিজ্ঞপ্তি খুঁজে পাওয়া যায়। যার মাধ্যমে নিশ্চিত হওয়া যায় যে, সুইডিশ ফেডারেশন অফ সেক্স এর প্রধানড্রাগান ব্রাটিকআরএফ এর কাছে যৌনক্রিয়াকে খেলা হিসেবে অন্তর্ভুক্ত করার আবেদন করেছিল। কিন্তু, আরএফ (RF) এর মানদণ্ড অনুযায়ী উত্তীর্ণ না হতে পারার কারণে এই আবেদন বাতিল হয়ে যায়।
আবার, সুইডিশ সংবাদমাধ্যম Göteborgs-Posten, এর অফিসিয়াল ওয়েবসাইটে গত ২৬ এপ্রিল প্রকাশিত একটি প্রতিবেদনথেকে জানা যায়, আরএফ এর একটি অংশ হওয়ার জন্য সুইডিশ ফেডারেশন অফ সেক্স এর করা আবেদন বাতিল হয়ে গেছে।
তাছাড়া, আরএফ-এর একজন মুখপাত্র আনা সেটজম্যান (Anna Setzman)রয়টার্সকে দেয়া এক লিখিত বিবৃতিতে বলেছেনঃ
“সুইডিশ স্পোর্টস কনফেডারেশন এই বিষয়টির প্রতি দৃষ্টি আকর্ষণ করেছে যে আন্তর্জাতিক মিডিয়ার কিছু অংশে বর্তমানে একটি সেক্স ফেডারেশন সুইডিশ স্পোর্টস কনফেডারেশনের সদস্য হয়েছে বলে প্রচার করা হচ্ছে। এটি সুইডিশ ক্রীড়া এবং সুইডেনকে কলঙ্কিত করার লক্ষ্যে মিথ্যা তথ্য। কোন সেক্স ফেডারেশন সুইডিশ স্পোর্টস কনফেডারেশনের সদস্য নয়”। (অনুবাদিত)
যেহেতু “সুইডিশ ফেডারেশন অফ সেক্স” আরএফ এর কোনো অংশ নয় এবং তাদের দাবিকে এই ফেডারেশন বাতিল করে দিয়েছে, তাই ফেসবুকে ভাইরাল হওয়া ভিত্তিহীন এই দাবিটিকে ফ্যাক্টওয়াচ “মিথ্যা” হিসেবে সাব্যস্ত করছে।
এই নিবন্ধটি ফেসবুকের ফ্যাক্ট-চেকিং প্রোগ্রামের নীতি মেনে লেখা হয়েছে।। এর উপর ভিত্তি করে ফেসবুক যে ধরণের বিধিনিষেধ আরোপ করতে পারে, সে সম্পর্কে বিস্তারিত জানুন এখানে। এছাড়া এই নিবন্ধ সম্পর্কে আপনার মূল্যায়ন, সম্পাদনা কিংবা আরোপিত বিধিনিষেধ তুলে নেয়ার জন্য আবেদন করতে এই লিঙ্কের সাহায্য নিন।